Bangla News

যে দোকানে টাকা দিয়ে পণ্য কেনাও হয় না, বিক্রিও হয় না!

জুমবাংলা ডেস্ক : ভোলায় বিবা স্টোর, সেখানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে থরে থরে আলু, পেঁয়াজ, আদা, কুমড়া, ঢেঁড়স, নতুন পুরাতন সার্ট, প্যান্ট, জামা কাপড়, স্যান্ডেল। যে কোনো ব্যক্তির কাছে প্রথম দেখায় এটি ডিপার্টমেন্টাল শপিং সেন্টার মনে হতে পারে। পার্থক্য হচ্ছে এটি টাকার বিনিময়ে কোনো পণ্য যেমন কেনা হয় না, তেমনি বিক্রিও হয় না। শুধু বিনিময় হয়।

এমন মানবতার সোর্স খ্যাত (মানবতার দেয়াল) হিসেবে গড়ে উঠেছে এক ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান। নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত যেকোনো পণ্য (পোশাক অথবা খাবার অথবা কাচা শাক সবজি) আপনি এই প্রতিষ্ঠানে রেখে যাবেন। আবার দরিদ্র অথবা নিম্নআয়ের যে কোনো মানুষ তার প্রয়োজনে ওই স্টোর থেকে পণ্য বিনা টাকায় নিয়ে যেতে পারবেন। সপ্তাহে দুই দিন স্টোরটি খোলা থাকবে। তবে স্টোরের বাইরে প্রতিদিন কিছু কাঁচা শাকসবজি, আলু পেঁয়াজ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দি ইনিশিয়েটিভ অব ভোলা সোসাইটি (বিবা) নামের একটি মানবিক প্রতিষ্ঠান এটি চালু করে।

স্টোরে জুতা, স্যান্ডেল, নতুন পোশাক, ভালো মানের পুরাতন জামা কাপড় সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। স্টোরটি দিনব্যাপী খোলা রাখা হয়। এর আগে বাংলা নববর্ষের আগের দিন জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক ই লাহী চৌধুরী ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম উপস্থিত থেকে এর কাজের উদ্বোধন করেন।

এর উদ্যোক্তা হচ্ছেন এ রব স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মো. মনিরুল ইসলাম। করোনার সময়ে প্রথম এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ওই সময় তার সঙ্গে ভোলা ক্ষুদে বিজ্ঞানী সংসদ ও স্থানীয় চারটি পত্রিকার সম্পাদক ও কয়েকজন সাংবাদিক যুক্ত হন। শহরের সদর রোডে এক মাসব্যাপী ওই কার্যক্রম চালু রাখা হয়। সেই ধারনা থেকে বর্তমানে মনিরুল ইসলাম তার বাড়ির সামনে ভোকেশনাল সড়কে বধ্যভূমির বিপরীত পাশে স্থায়ীভাবে গড়ে তোলেন বিবার অফিস। আর তাতেই মানবতার দেয়াল হিসেবে স্টোরটি চালু করা হয়।

এ সময় উপস্থিত থেকে আয়োজকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন- সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আলী সুজা, পৌর কাউন্সিলর মাইনুল ইসলাম শামিম, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি মো. ফয়সাল, প্রেস ক্লাব সম্পাদক অমিতাভ রায়, বিবার সভাপতি সহকারী অধ্যাপক মো. আজিজুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম, শিশু সংগঠক আদিল হোসেন তপু, সাংবাদিক ও লেখক ছোটন সাহাসহ বিবার সদস্যরা।

জেলা প্রশাসক জানান, এই আয়োজন শুরুটা একজন ব্যক্তি করলেও এখন এটি ধরে রাখার দায়িত্বে আমাদের সবার। অনেক পরিবার আছে যারা অন্যের কাছে হাত পাততে পারেন না। লোকলজ্জায় অভাব-অনটনের কথা জানাতে পারেন না। তারা এখান থেকে সহায়তা পেতে পারেন।

মনিরুল ইসলাম জানান, এটি বছরজুড়ে ধরে রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী সপ্তাহে বৃহস্পতি ও শুক্রবার খোলা রাখা হবে। এ কাজটি সম্পূর্ণ মানবতার জন্য করা হচ্ছে বলে জানান সংগঠনের সভাপতি।

এদিকে সবজির পাশাপাশি এক জোড়া স্যান্ডেল পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন ৭০ বছর বয়সী নাজমা বেগম। এটি চালু থাকলে তিনি আর ভিক্ষা চাইতে বের হবেন না বলেও জানান। এমন কথা জানান ছুটে আসা শতাধিক নারী ও পুরুষ।

রিকশাচালক মহসিন জানান, এ উদ্যোগ তাদের মতো অনেক গরিবের উপকারে আসবে।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button