ইরানে পুলিশের সঙ্গে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ
ইরানে পুলিশের সঙ্গে দেশটির অন্যতম স্বনামধন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। তেহরানের শরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার পার্কিংয়ের ভেতর ওই শিক্ষার্থীরা আটকা পড়েছেন বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে যেসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সেখানে দেখা গেছে পুলিশের গুলি চালাচ্ছে এবং ছাত্ররা দৌড়ে পালাচ্ছে।ইরানের রাজধানী তেহরানের শরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গাড়ি পার্কিং এলাকায় শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ আটকা পড়েছে। সম্প্রতি পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে ২২ বছরের এক তরুণীর মৃত্যুর পর থেকেই ইরানজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। ওই তরুণী পোশাক সংক্রান্ত বিধিনিষেধ ভঙ্গ করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
পুলিশের হেফাজতে থাকাকালে এক নারীর মৃত্যু হওয়ার পর সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে।পুলিশ হেফাজতে থাকার পর হাসপাতালে ওই তরুণীর মৃত্যু ঘটে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে তাকে মারধরের অভিযোগ করা হয়। তবে এই অভিযোগ কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে। পুলিশ বলছে, তার ওপর কোন নির্যাতন করা হয়নি। তার হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয়।
আমিনির শেষকৃত্য চলাকালে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ইরানে বেশ কয়েক বছর এমন অস্থিতিশীলতা দেখা যায়নি।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, শরিফ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলছে। দূর থেকে বন্দুকের গুলির শব্দও শোনা যাচ্ছে।
অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একটি গাড়িতে যারা বসে ভিডিও করছিল তাদের গুলি করতে মোটরবাইকে করে নিরাপত্তা বাহিনীর লোকেরা আসছে। ইরান ইন্টারন্যাশনাল সাইটসের খবরে বলা হচ্ছে, ছাত্রাবাসগুলোতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে এবং গুলি করেছে। অন্য এক খবরে বলা হচ্ছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে।
রোববার ছিল এমন একটা দিন যখন অনেক বিক্ষোভকারী ছাত্ররা প্রথমবারের মতো সেখানে যায়। খবরে বলা হচ্ছে, রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে সংঘর্ষের খবর শুনে একটু বেশি রাতের দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান দরজায় বিক্ষোভকারীরা সমবেত হতে থাকেন।
সংঘর্ষের খবর শোনার পরে গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বাইরে ভিড় জমে যায়। গত দুই রাত তেহরান ও অন্যান্য শহরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ বেড়েছে।তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।ইরান হিউম্যান রাইটস বলছে, ইরানজুড়ে এখন পর্যন্ত ১৩৩ জন নিহত হয়েছে।
ইরানের সরকার বলছে বহির্বিশ্বের শত্রুরা এ ধরনের বিক্ষোভে উসকানি দিচ্ছে। দেশটির সরকার বিক্ষোভকারীদের কঠোরভাবে দমন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।