Featuredএক্সক্লুসিভবিএনপি

হঠাৎ বেগম জিয়ার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের দূরত্ব

*বেগম জিয়ার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের দূরত্ব জাতীয় পার্টি যখন সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে, যখন জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলছে তারা দালালি করতে চান না ঠিক সেই সময়ে রওশন এরশাদ ইভিএময়ে ভোট করার ব্যাপারে তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন।*

*এক ভিডিও কনফারেন্সে গতকাল রওশন এরশাদ সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনের দল এবং ইভিএম ভোট নিয়ে তার কোনো আপত্তি নেই। জাতীয় পার্টিতে স্পষ্টত এক ধরনের টানাপোড়ন চলছে। আর এই টানাপোড়নে জিএম কাদেরকে ভালোভাবেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন রওশন এরশাদ। শেষ পর্যন্ত রওশন এরশাদ এবং জিএম কাদেরের মধ্যে কে জিতবেন সেটি অন্য বিষয়।*

*তবে রওশন এরশাদ যে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ট্রাম্প কার্ড, এ নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের কোন সন্দেহ নেই। শুধু রওশন এরশাদ একা না। বিএনপি একই অনিশ্চয়তার মধ্যে ভুগছে। বেগম খালেদা জিয়া এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে জামিনে রয়েছেন। এই জামিনে থাকার কারণে তিনি তার বাসভবন ফিরোজায় বসবাস করছেন। *

*বেগম খালেদা জিয়া কোন অবস্থাতেই জেলে যেতে চান না। বরং তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান। বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বলা হচ্ছে যে, বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে সরকার অন্যায় করছে। সরকারের ন্যায়-অন্যায় পরের কথা, *

*কিন্তু বেগম খালেদা জিয়াও আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের ট্রাম্প কার্ড  হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কারণ, খালেদা জিয়াকে দিয়েই সরকার আগামী নির্বাচনের ‘গিভ এন্ড টেক’ করতে চায়। যদিও প্রধানমন্ত্রী গতকাল গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, কোনো দল নির্বাচনে আসবে, না আসবে সেটি সব রাজনৈতিক দলের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়।*

*তবে তিনি আশা করেন সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। প্রধানমন্ত্রীর এই আশাবাদের পিছনে কি কারণ রয়েছে, এটি অনুসন্ধান করতে গিয়ে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি দুটি দলই নির্বাচনে আসবে এবং এই নির্বাচনে আসার ক্ষেত্রে বেগম জিয়া এবং রওশন এরশাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।*

*বেগম জিয়ার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আন্দোলনের গতিপথ কিভাবে নির্ধারিত হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখন বেগম জিয়া নেন না। এটি লন্ডন থেকে তারেক জিয়া দিচ্ছেন। যদিও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, বেগম জিয়ার নেতৃত্বেই তারা আন্দোলনে আছেন। কিন্তু বেগম জিয়া কার্যত বিএনপিতে এখন পুতুল হিসেবেই চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করছেন।*

*ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াই দল চালাচ্ছেন। কিন্তু এটিও সত্যি যে, তারেক জিয়ার চেয়ে বেগম জিয়ার জনপ্রিয়তা বিএনপির মধ্যে অনেক বেশি। শুধু বিএনপিতে নয়, বেগম খালেদা জিয়া সাধারণ জনগণের মাঝেও তারেক জিয়ার চেয়ে জনপ্রিয়তায় যোজন যোজন এগিয়ে। আর এই সুযোগটিকেই কাজে লাগাতে চায় সরকার। সরকারের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।*

*শামীম এস্কান্দার নিয়মিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রথম দফায় যখন বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া হয় সেই জামিন গ্রহণের আগে শামীম এস্কান্দার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এরপর ২০২০ সালের ২৪ মার্চ বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্ত করা হয়। বেগম খালেদা জিয়ার চাবি সরকারের হাতেই। *

*সরকার মনে করছে যে, নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়ার যে কোন নির্দেশ দলের নেতাকর্মীরা অবশ্যই পালন করবে। বেগম খালেদা জিয়াকে তারেক জিয়া যতই কোণঠাসা করে রাখুক না কেন শেষ পর্যন্ত বিএনপিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি বেগম জিয়াই এবং বিএনপির কর্মীদেরকে তিনি নিজে নির্দেশ দিবেন সেটি তারা প্রতিপালন করবেন। *

*রওশন এরশাদের অবস্থা অতটা মজবুত নয় জাতীয় পার্টিতে। কিন্তু এরশাদের উত্তরাধিকার কে, এ নিয়ে জাতীয় পার্টির মধ্যে টানাপোড়ন রয়েছে। রওশন এরশাদের সমর্থক কম থাকতে পারে। কিন্তু তাকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আবেগ রয়েছে। বিশেষ করে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে যারা নির্বাচনমুখী তারা সবাই রওশন এরশাদের সঙ্গে একাত্ম হবেন। *

*এই বিবেচনা থেকেই শেষ পর্যন্ত জিএম কাদের তার অবস্থা জাতীয় পার্টিতে ধরে রাখতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আর তাই আগামী নির্বাচনে রওশন এরশাদ এবং বেগম খালেদা জিয়াই সরকারের ট্রাম্পকার্ড হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।*

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button