আওয়ামী লীগকিশোরগঞ্জছাত্রলীগবাংলাদেশরাজনীতি

কিশোরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত পাঁচজনকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হোসেনপুর পৌর সদরে দুই দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের ঘটনায় হোসেনপুর বাজারসহ চারদিকে আতঙ্ক ছড়ায়। পরে নবগঠিত উপজেলা ছাত্রলীগের বিবদমান দুই পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মীর মধ্যে বেলা আড়াইটার দিকে হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় সড়কে আসাদুজ্জামান খান অডিটরিয়ামের সামনে আরেক দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলীয় সদস্য সংগ্রহ করার জন্য ঢাকা থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কয়েক নেতা হোসেনপুরে আসার কথা। এ উপলক্ষে আজ বেলা ১১টা থেকে উপজেলার সিদলাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা হোসেনপুর পৌর সদরের আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে ভেতরে–বাইরে অবস্থান নেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও একই জায়গায় অবস্থান নেন।

পরে দুপুর ১২টার দিকে কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মসিউর রহমান হুমায়ুনের অনুসারীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ রামদা, বল্লমসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষে আহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সজীব মিয়া, সুজন মিয়া, মো. দয়ালসহ পাঁচজনকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যদের সদর জেনারেল হাসপাতাল, হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সংঘর্ষে সংসদ সদস্য পক্ষের আহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুজন মিয়া বলেন, দুপুরে তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে–বাইরে অপেক্ষা করেন। এ সময় বিরোধী মসিউর রহমান হুমায়ূন পক্ষের স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে তিনিসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছেন।

নবগঠিত ছাত্রলীগের সভাপতি ও মসিউর রহমানের অনুসারী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের অনুষ্ঠানে তাঁদের দাওয়াত ছিল। তাই তিনি তাঁর সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাতকে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে যান। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। অথচ এখন ছাত্রলীগকে দোষারোপ করা হচ্ছে।এ বিষয়ে মসিউর রহমানের অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শহীদ মোল্লা মুঠোফোনে বলেন, এটা স্বেচ্ছাসেবক লীগ অনুষ্ঠান থাকলেও মূলত সংঘর্ষ হয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

৫ অক্টোবর হোসেনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকেই স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মসিউর রহমানের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে আসছে। গত সোমবারও হোসেনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছিলেন। ওই দিন একটি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুদ আলম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তদন্ত সাপেক্ষে ও অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button