এক্সক্লুসিভবরিশালবাংলাদেশবিএনপিরাজনীতি

সমাবেশের ৪২ ঘণ্টা আগেই বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিএনপি নেতাকর্মীদের অবস্থান

বৃহস্পতিবার রাত ৮টা। বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশের নির্ধারিত সময়ের ৪২ ঘণ্টা বাকি। এর আগেই কয়েক হাজার নেতা-কর্মী বরিশাল নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সমাবেশের মঞ্চের সামনে টাঙানো শামিয়ানার নিচে অবস্থান নিয়েছেন।

তাঁদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশাল উদ্যান ও চারপাশ। রাত বাড়ছিল, তখনো নেতা-কর্মীরা দলে দলে উদ্যানের সমাবেশ মঞ্চের দিকে যাচ্ছিলেন। অনেকে ত্রিপল বিছিয়ে ব্যাগ নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। সবাই দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন।

এ সময় সেখানে দেখা যায় গণসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান, সদস্যসচিব মীর জাহিদুল ইসলামসহ অনেককে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা সমাবেশস্থলে অবস্থান করা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে নানাভাবে উজ্জীবিত করছেন। কেউ কেউ বক্তব্য দিচ্ছেন।

উদ্যানের এক পাশে চলছে রান্নাবান্না। বরগুনা ও আমতলী থেকে ট্রাকে চাল, ডাল, গরুর মাংস নিয়ে এসেছেন সেখানকার নেতারা। সেসব রান্নার কাজ চলছে। বিএনপি নেতারা বলেন, সড়ক, নদীপথ বন্ধ করে দেওয়ার প্রত্যুত্তর দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। তাই আগেভাগেই দলে দলে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন সবাই। কেউ বিছানাপত্র, খাবার, শুকনা খাবার নিয়ে রাত্রিযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরের মধ্যে এই উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাবে।

বিলকিস আক্তার জাহান বলেন, বরিশালবাসী প্রমাণ করে দিয়েছে তাঁরা এই অবৈধ সরকার আর চায় না। এর জলজ্যান্ত উদাহরণ এই জমায়েত। সমাবেশ শুরুর আগেই হাজার হাজার নেতা-কর্মীতে পূর্ণ হয়ে উঠেছে উদ্যান।

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে। তাই সরকার জনগণকে ভয় পাচ্ছে। ভয় পেয়ে আমাদের নেতা-কর্মী ও জনগণকে ভয় দেখাচ্ছে। তাঁদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু এতে করে কোনো লাভ হবে না। মানুষ ফুঁসে উঠেছে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না করে মানুষ ঘরে ফিরবেন না।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, পরিবহন বন্ধ করে কোনো লাভ হবে না। তাদের নেতা-কর্মীরা ইতোমধ্যেই নগরীতে অবস্থান নিয়েছেন।এদিকে বিএনপির সমাবেশ সামনে রেখে চলছে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের একের পর এক শোডাউন। নগরজুড়ে তাই রাজনৈতিক উত্তাপ।

বরিশালে বিএনপির সমাবেশস্থলে অবস্থান নেয়া ছাত্রদলের কর্মী আবু মাসুম বলেন, ‘গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে কোনো আপস করব না। সবকিছু বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, তাই আগে থেকেই নগরীতে এসে সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছি। এখানেই থাকব।’

বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি বলেন, ‘সমাবেশে আসার পথে পথে বাধা সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। কোনো বাধাই আমাদের নেতা-কর্মীরা মানবে না। লাখ লাখ মানুষের জমায়েত হবে এই স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে।’

বরিশালের সমাবেশ নিয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, ‘গণসমাবেশের দিন যত ঘনিয়ে আসছে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন তত বাড়ছে। এবার বুকে গুলি করলেও আমাদের নেতা-কর্মীরা দাবি আদায় না করে আন্দোলন থেকে সরে আসবে না। তাই যতই পুলিশি অভিযান হোক না কেন, আমাদের নেতা-কর্মীরা পিছু হটবে না।’

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button